ইসলাম ও মানবতা
ইসলাম ও মানবতা
মানবতা ও মানুষের কল্যাণে ইসলামী শিক্ষা ইসলাম ধর্মের প্রধান গ্রন্থ কুরআন শরীফে, মুসলমানরা বিশ্বাস করেন যে মানবজাতির জন্য দ্বারা যেটি অবতীর্ণ হয়েছে, লিপিবদ্ধ হয়েছে।হযরত মুহাম্মদ (দঃ) এর জীবন এবং তার কর্মের মধ্যে এই শিক্ষাগুলো পরিলক্ষিত হয়।মুসলমানদের কাছে, ইসলাম হচ্ছে তা যা কুরআনে পালনকরার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং যেভাবে হযরত মুহাম্মদ (দঃ) তার জীবন অতিবাহিত করেছেন।তাই, ইসলাম ধর্ম সংক্রান্ত যেকোন বিষয় বুঝতে হলে এই দুইটির (কুরআন এবং মুহাম্মদের কর্ম) উপর নির্ভর করতে হবে।
ইসলামে সামাজিক কল্যাণ:-
ইসলামী ঐতিহ্যে, সামাজিত কল্যাণের ধারণাটিকে এর প্রধান মূল্যবোধ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে এবং বিভিন্নভাবে সামাজিক সেবা চর্চার বিষটিকে উৎসাহিত এবং নির্দেশ দেয়া হয়েছে।একজন মুসলমানের ধর্মীয় জীবন অপূর্ণাঙ্গ থেকে যায় যদি না তিনি মানবকল্যাণে তিনি অংশগ্রহণ না করেন।সমাজকল্যাণ ইসলামী ধারণা সর্ম্পকে কুরআন এর নিন্মোক্তআয়াতটি প্রায় সময় উল্লেখ করা হয়ে থাকে
সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিমদিকে মুখ করবে, বরং বড় সৎকাজ হল এই যে, ঈমান আনবে আল্লাহর উপর কিয়ামত দিবসের উপর, ফেরেশতাদের উপরএবং সমস্ত নবী-রসূলগণের উপর, আর সম্পদ ব্যয় করবে তাঁরই মহব্বতেআত্নীয়-স্বজন, এতীম-মিসকীন, মুসাফির-ভিক্ষুক ও মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্যে।আর যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দান করে এবং যারা কৃত প্রতিজ্ঞা সম্পাদনকারী এবং অভাবে, রোগে-শোকে ও যুদ্ধের সময় ধৈর্য্য ধারণকারী তারাই হল সত্যাশ্রয়ী, আর তারাই পরহেযগার।(২:১৭৭)
একইভাবে, ইসলাম ধর্মে মাতা-পিতা, প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন, অসুস্থ, বৃদ্ধ এবং ক্ষুদ্র জাতিসত্তার লোকদের প্রতি দায়িত্বের কথা নির্দিষ্টভাবে ব্যাখাকরা হয়েছে।হাদিসে কুদসিতে (পবিত্র হাদিস) লিপিবদ্ধ একটি দীর্ঘ হাদিসে বলা হয়েছে যে আল্লাহ, হাশরের দিন, সে সকল মানুষের উপর অসন্তুষ্ট হবেন যারা অসুস্থ রোগীদের সেবাকরেনি এবং যারা ক্ষুদার্তদের খাওয়ার জন্য খাবার দেয়নি।এই হাদিসটি দ্বারা মানব সমাজকে অন্যের প্রয়োজনের সময় সাড়া দেয়ার বাধ্যবাধকতার বিষয়টিকে স্মরণ করিয়েদেয়া হয়েছে। ব্যক্তি, পরিবার, রাষ্ট্র, এবং বে-সরকারী প্রতিষ্ঠান সকলকেই সামাজিক দায়িত্ব এবং সামাজিক কল্যাণ প্রচারের দায়িত্ব পালন করতে হবে।পবিত্র কোরআন শরীফে এরশাদ হয়েছে:
তোমরা শ্রেষ্ঠতম ঐসব উম্মতের মধ্যে, যাদের আত্মপ্রকাশঘটেছে মানবজাতির মধ্যে; সৎকাজের নির্দেশ দিচ্ছো এবংমন্দ কাজে থেকে বারণ করছো, আর আল্লাহর উপর ঈমান রাখছো এবং যদি কিতাবী (সম্প্রদায়) ঈমান আনতোতবে এটা তাদের জন্য কল্যাণকর ছিল।তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক মুসলমান রয়েছে এবং অধিকাংশ কাফির।(৩:১১০).
যাই হোক, এই যথাসাধ্য সর্বোত্তম পদ্ধতিতে পালন করতে হবে: কোন ব্যক্তির সম্মানে আঘাত করা উচিত নয়,এবং কোনো কারণে কারো যেন কোন অনিষ্ট না হয়।ইসলামী ঐতিহ্যে, পরিবার সদস্য;রে যথাযথ শিক্ষা প্রদান এবং নৈতিক মূলবোধের শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে সমাজেরজন্য একজন ভাল নাগরিক তৈরীতে পরিবারের গুরুত্বপূর্ণভূমিকা রয়েছে।রাষ্ট্র দায়িত্ব হচ্ছে নাগরিকদের মানবাধিকার রক্ষা করা, এ্রর পাশাপাশি সুশীল সমাজের বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানওসরকারী সেবা ও দাতব্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
ইসলামে বিভিন্ন মানুষের অধিকারঃ- মাতা-পিতা এবং আত্মীয়স্বজনের অধিকার:-
ইসলামে মাতা-পিতার অধিকার এবং তাদের সেবার উপর বিশেষ গুরুত্বদেয়া হয়েছে। মাতা-পিতাকে সম্মান করা এবং তাদের আদেশ মান্য করার বিষয়টিকে ধর্মীয় বাধ্যবাধকতার মধ্যে রাখা হয়েছে এবং ইসলামি আইনশাস্ত্র ও ইসলামি ঐতিহ্যে তাদের সাথে দুর্ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মাতা-পিতার অধিকার সর্ম্পকে, আল্লাহর হুকুম হচ্ছে তাদের সাথে ভাল ব্যবহার করা, তাদের সেবা যত্ন করা বিশেষ করে বৃদ্ধ বয়সে, তাদের সাথে ভদ্রভাবে কথা বলা এবং তাদের প্রতি সবোর্চ্চ সম্মান প্রদর্শন করা। মাতা-পিতার ধর্মীয় পরিচয় যা্ই হোক না কেন আল্লাহরএই নির্দেশ সমানভাবে কার্যকর হবে, অর্থাৎ মাতা-পিতা মুসলিম হোক আর অমুসলিম হোক একজন মুসলিম ব্যক্তির দায়িত্ব হচ্ছে তার মাতা-পিতাকে সম্মান করা এবং সেবা করা।পবিত্র হাদিসে প্রচুর দৃষ্টান্ত পরিলক্ষিত হয় যেখানে হযরতমুহাম্মদ (দঃ) তার সাহাবীদের আদেশ করেছেন যে মাতা-পিতার সাথে সৎ ও সদয় হওয়ার জন্য এবং তাদের যথাসাধ্য সর্বোত্তম পদ্ধতিতে সেবা করার জন্য। মাতা-পিতাকে অপমান করা বা তাদের সাথে খারাপ আচরণ করাকে একটি কবিরাহ গোনাহ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।মাকে, যেকোন পরিস্থিতিতে, সন্তানদের কাছ থেকে সম্মানও সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বাবার উপর অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।ইসলামে মায়ের উচ্চ মর্যাদা সবচেয়ে ভালভাবে বর্ণনা করা হয়েছে হযরত মুহাম্মদ (দঃ) এর এই বাণী দ্বারা যেখানে তিনি বলেছেন, "মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত"।একইভাবে, ইসলামে আত্মীয়স্বজনদের অধিকারকেও সংরক্ষণ করা হয়েছে।আত্মীয়স্বজনের প্রতি দায়িত্বকে দুইভাবে ব্যাখা করা হয়েছে: তাদের সাথে ভাল সর্ম্পক স্থাপন করে, এবং যদি তাদের আর্থিক সহযোগিতার প্রয়োজন হয় তাহলে আর্থিকসহযোগিতা প্রদানের মাধ্যমে।[আত্মীয়স্বজনদের সাথে সুসর্ম্পক বজায় রাখার উপর জোর দেয়া হয়েছে এবং তাদের সাথে সর্ম্পক ছিন্ন করার ব্যাপারে সাবধান করা হয়েছে।হাদিসে বলা হয়েছে যে :
আত্মীয়ের সাথে সর্ম্পক ছিন্নকারী ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।
প্রতিবেশীর অধিকার:-
জিব্রাইল আমাকে আমার প্রতিবেশীর সাথে দয়া এবং ভদ্রভাবে ব্যবহার করার জন্য সুপারিশ করল, যাতে আমি মনে করি যে তিনি আমাকে তাদেরকে আমার আহলের মধ্যে রাখার নির্দেশ করছেন।
হযরত মুহাম্মদ (দঃ), সহীহ বুখারী, ৮:৭৩:৪৪(ইংরেজি)
প্রতিবেশীর ধর্মীয় পরিচয় যাই হোক না কেন, ইসলাম ধর্মে মুসলমানদের তাদের প্রতিবেশীর সাথে যথাসাধ্য বিনয়আচরণ প্রদর্শন করতে এবং তাদের অসুবিধা হতে পারে এমন কোন কাজ সৃষ্টি না করার কথা বলা হয়েছে।পবিত্র কোরআনে মুসলানদেরকে তাদের প্রতিবেশীর দৈনন্দিন সকল প্রয়োজনে তাদের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলা হয়েছে।পবিত্র হাদিস শরীফে হযরত মুহাম্মদ (দঃ) এরশাদ করেন,সে ব্যক্তি মুমিন নয়, যে পেট ভরে খায় আর পাশেই তার প্রতিবেশী না খেয়ে থাকে।আবু শুরাইহ থেকে বর্ণিতআরেকটি হাদিসে প্রতিবেশীর অধিকার সর্ম্পকে বলা হয়েছে : হযরত মুহাম্মদ (দঃ) বলেন, "আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি, সে ঈমানদার নয়! আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি, সে ঈমানদার নয়! আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি, সে ঈমানদার নয়!" তখন হযরত মুহাম্মদকে (দঃ) প্রশ্ন করা হল, "হে আল্লাহর হাবীব, কে সে? " তিনি বললেন, "যে ব্যক্তির অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপধবোধ করেনা সে ব্যক্তি ঈমানদার নয়।“
শিশুদের অধিকার:-
মূল নিবন্ধ: ইসলাম ও শিশু
মুহাম্মদী ইসলামী শরীয়াতে শিশুদের অধিকার সংরক্ষিত হয়েছে।শিশুদের অন্ন, বস্ত্র এবং সাবালক হওয়া পর্যন্ত নিরাপদ থাকার অধিকার রয়েছে; ভাইবোনদের মধ্যে সমান ব্যবহার পাওয়ার অধিকার; সৎ মাতা-পিতা বা জন্মদাতা মাতা-পিতা দ্বারা কোন কাজে জোর না খাটানো অধিকার এবং শিক্ষাগ্রহণের অধিকার রয়েছে।মাতা-পিতার দায়িত্ব হচ্ছে তার সন্তানদের মৌলিক ইসলামী বিশ্বাস , ধর্মীয় কর্তব্য এবং সঠিক ভাবধারা, সততা, সত্যবাদিতা, ভদ্রতা, এবং উদারতা মত ভাল নৈতিক গুণাবলী শিক্ষা দেয়া।কোরআনে এতিম শিশুদের প্রতি কঠোর মনোভাব এবং অত্যাচার করতে বারণ করা হয়েছে যখন তাদের প্রতি দয়া ও সুবিচারের প্রতি আহ্বান করা হয়েছে।যারা এতিমদের সম্মান করেনা এবং এতিম শিশুদের খেতে দেয় না কোরেআনে তাদের প্রতি ভৎসনা করা হয়েছে।(কোরআন ৮৯:১৭-১৮).
হযরত মুহাম্মদ (দঃ) শিশুদেরকে খুবই ভালবাসতেন।ইসলামিক ইতিহাসে বর্ণিত আছে যে, হযরত মুহাম্মদ (দঃ)হোছাইনের, তাঁর পৌত্র, সাথে খেলার সময় তার পিছনে ততক্ষণ পর্যন্ত দৌড়াতেন যতক্ষণ না তাকে ধরতে পারতেন।তিনি শোক সন্তপত্ব শিশুকে সান্তনা দিয়েছিলেন যার পোষা নাইটিংগেল মারা গিয়েছিল।হযরত মুহাম্মদ (দঃ) শিশুদের সঙ্গে প্রচুর খেলতেন, তাদের সঙ্গে কৌতুক করতেন এবং তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন।তিনি অন্য ধর্মের শিশুদেরকেও ভালবাসতেন।একবার তিনি তার ইহুদি প্রতিবেশীর এক অসুস্থ ছেলেকেদেখতে গিয়েছিলেন।
সংখ্যালঘুদের অধিকার:-
মূল নিবন্ধগুলি: ইসলাম ও অন্যান্য ধর্ম এবং জিম্মি
বর্তমানে, মুসলিম দেশগুলোতে সংখ্যালঘুদের অধিকার মারাত্মকভাবে খর্ব করা হচ্ছে।তবে শুধু মুসলিম দেশগুলোতে নয়, অমুসলিম দেশগুলোতেও মুসলমানদের অধিকার খর্ব করা হচ্ছে।ঐতিহাসিকভাবে, অমুসলিম সংখ্যালঘুরা খ্রিস্টান বিশ্বের তুলনায় মুসলিম দেশগুলোতে অধিক স্বাধীনতা ভোগ করেছে।এটি বিশেষ করে অটোমান সাম্রাজ্য এবং মুঘল সাম্রাজ্যক্ষেত্রে ছিল।আহলে কিতাবসহ অন্যান্য অমুসলিমরা এই স্বাধীনতা ভোগ করেছিল।সংখ্যালঘুদের অধিকার ইসলামি আইনের অধীনে আবশ্যকহিসাবে গণ্য করা হয়েছে যা সংখ্যালঘুদের জন্য অন্যান্যআন্তর্জাতিক আইনের সাথে সংগতিপূর্ণ।
বর্ণবাদী বৈষম্যের অস্বীকৃতি:-
মানব ইতিহাসে, দীর্ঘ দিন ধরে হয়ে আসা জাতিগত বৈষম্যের কারণ হচ্ছে অবিচার।ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল এই যে মানবজাতিকে আদমের সন্তান হিসেবে বিবেচনা করা হয়।ধর্ম হিসেবে, ইসলাম মানুষের মধ্যে জাতিগত বৈষম্যের বিষয়টিকে সমর্থন করেনা।হযরত মুহাম্মদ (দঃ) তার বিদায় হজ্বের ভাষণে জাতিগতবৈষম্যকে বর্জন করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।ইসলামে বর্ণ, ভাষা বা গোষ্ঠীর উপর ভিত্তি করে মানুষেরমধ্যে কোন তারতম্য সৃষ্টি করা হয়নি।মুহাম্মদী ইসলামি দর্শন অনুযায়ী, কর্তব্যনিষ্ঠা বা নৈতিক শ্রেষ্ঠত্ব শ্রেণী ছাড়া ইসলামে আর কোন সুবিধাভোগী বা মনোনীত শ্রেণীর অস্তিত্ব নেই।পবিত্র কোরআনের একটি আয়াতে কোন মানুষকেই অবমূল্যায়ন না করার জন্য নিষেধ করা হয়েছে।মনে করা হয়ে থাকে যে ব্যক্তিগত প্রতিভা এবং প্রচেষ্টায়পার্থক্যের কারণ স্বরপ মানুষের মাঝে সামাজিক মর্যাদা ও আয়ের পার্থক্যটা সৃষ্টি হয়।সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে মুসলমানদের প্রতি ভ্রাতৃত্ব এবং প্রত্যেক মানুষের প্রতি মানবতার ধারনা সৃষ্টির সংস্কৃতিগড়ে তোলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
অর্থনৈতিক কল্যাণঃ-
যাকাত:-
ইসলামে, যাকাত হল গরীবদের সাহায্য করার একটি বাধ্যতামূলক পদ্ধতি এবং সে সকল মুসলমানদের উপর যাকাত দান করা ফরজ করা হয়েছে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী।প্রত্যেক স্বাধীন, পূর্ণবয়স্ক মুসলমান নর-নারীকে প্রতি বছর স্বীয় আয় ও সম্পত্তির একটি নির্দিষ্টঅংশ, (২.৫ শতাংশ (২.৫%) বা (১/৪০)), যদি তা ইসলামী শরিয়তনির্ধারিত সীমা (নিসাব পরিমাণ) অতিক্রম করে তবে গরীব-দুঃস্থ মুসলমানদের মধ্যে বিতরণের নিয়মকে যাকাত বলা হয়।সাধারণত নির্ধারিত সীমাতিক্রমকারী সম্পত্তির ২.৫ শতাংশ (২.৫%) বা (১/৪০) অংশ বছর শেষে গরীব-দুঃস্থ মুসলমানদের মধ্যে বিতরণ করতে হয়।পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে : আর মুশরিকদের জন্য রয়েছে দুর্ভোগ।যারা যাকাত দেয় না এবং পরকালকে অস্বীকার করে।(৪১:৬-৭)।মুসলমানরা যাকাত প্রদান করাকে ধার্মিক কাজগুলোর একটি বিবেচনা করে থাকেন যা প্রদানের মাধ্যমে তারা তাদের মুসলমান ভাইদের কল্যাণ করার অভিলাষ প্রকাশ করেন এবং সেই সাথে সমাজের বিত্তবান ও গরীব-দুঃস্থদের মাঝে সামাজিক ঐক্য রক্ষা করার উপায় হিসেবেও বিবেচনা করেন।যাকাত সম্পদের অধিকতর ন্যায়সঙ্গত পুনঃবন্টন ব্যবস্থাকেউন্নত করে এবং মুসলিম উম্মাহর মাঝে সংহতির ধারাকেবজায় রাখতে সাহায্য করে।
সাদাকা:-
যাকাতের মত সাদাকা বাধ্যতামূলক নয়।সাদাকার অর্থ হল স্বেচ্ছায় দান যা সাধারণত সমবেদনা,ভালবাসা, বন্ধুত্ব (ভ্রাতৃত্ব), ধর্মীয় দায়িত্ব বা মহৎ কাজের স্বরূপ হিসেবে প্রদান করা হয়ে থাকে।পবিত্র কোরআন ও হাদিস উভয় গ্রন্থে গরীব ও অভাবীমানুষের কল্যাণে অর্থ ব্যয়ের বিষয়ের উপর অনেক বেশি জোর দেয়া হয়েছে।পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে: আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছি, তা থেকে মৃত্যু আসার আগেই ব্যয় কর।অন্যথায় সে বলবেঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে আরও কিছুকাল অবকাশ দিলে না কেন? তাহলে আমি সদকা করতাম এবং সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।(63:10) আপনি কি দেখেছেন তাকে, যে বিচারদিবসকে মিথ্যা বলে? সে সেই ব্যক্তি, যে এতীমকে গলা ধাক্কা দেয়এবং মিসকীনকে অন্ন দিতে উৎসাহিত করে না।অতএব দুর্ভোগ সেসব নামাযীর, যারা তাদের নামায সম্বন্ধে বে-খবর; যারা তা লোক-দেখানোর জন্য করে এবং নিত্য ব্যবহার্য্য বস্তু অন্যকে দেয় না| :1 107 :1–7). গরীব ও দুঃস্থদের প্রয়োজনে ব্যয় না করে সে অর্থকে সঞ্চয় করাকে ইসলামে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং এর সর্ম্পকে সতর্কও করা হয়েছে।
No comments